টাইফয়েড শুধুমাত্র সাধারণ জ্বর নয়, তার চেয়েও বেশি।
খামোকা জটিলতা বাড়ানো অর্থহীন। টাইফয়েডের ঝুঁকি বুঝে নিন, আপনার ডাক্তারের সঙ্গে এটি নিয়ে আলোচনা করুন এবং সুরক্ষিত থাকার জন্য সময়োপযোগী এবং উপযুক্ত পদক্ষেপ করুন।

বিশ্বের মধ্যে ভারতে টাইফয়েড আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক[1,2] এর পরেও, আমরা এই রোগ সম্পর্কে আদতে কতটা জানি?
যদি সক্রিয় প্রতিরোধ ব্যবস্থাগুলিতে গুরুত্ব না দেওয়া হয়, তাহলে আপনিও ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারেন।

প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী টাইফয়েডের 4-5 মিলিয়ন মামলা নথিভুক্ত হয়[3]

কোনও ব্যক্তি সংক্রামিত হওয়ার সাধারণত 1 বা 2 সপ্তাহ পর থেকে টাইফয়েডের লক্ষণগুলি প্রকট হতে থাকে[4]

সঠিক চিকিৎসা ছাড়া, 30% পর্যন্ত ক্ষেত্রে টাইফয়েড মারাত্মক হতে পারে[5]
2017 থেকে 2020 সালের মধ্যে সংগৃহীত তথ্য অনুসারে, বিশ্বব্যাপী টাইফয়েডের অর্ধেকেরও বেশি বোঝা ভারত বহন করে। বর্তমান তথ্য ভিন্ন হতে পারে।
সূত্র: John et al., NEJM 2023; Cao et al., JID 2021.
টাইফয়েড কেন একটি গুরুতর স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা?

অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধ
ব্যাপক (অত্যধিক এবং অযৌক্তিক) অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ (AMR) কে বাড়িয়ে তুলেছে, যার ফলে আরও বেশি ওষুধ-প্রতিরোধী টাইফয়েড ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয়েছে এবং ফলশ্রুতিতে জটিলতা বৃদ্ধি পেয়েছে তথা টাইফয়েডের চিকিৎসায় ব্যবহৃত সাধারণ ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। [6]

সিস্টেমিক সংক্রমণ
টাইফয়েড অন্ত্র থেকে রক্তের মাধ্যমে অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে, এবং বিভিন্ন অঙ্গকে প্রভাবিত করে। চিকিৎসা না করা হলে এটি গুরুতর লক্ষণ এবং জটিলতা সৃষ্টি করে, যার ফলে প্রচুর যন্ত্রণা ভোগ করতে হতে পারে, বিভিন্ন অঙ্গের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে এবং সম্ভাব্য মারাত্মক পরিণতিও ঘটতে পারে।[7]

সংক্রামক
টাইফয়েড দূষিত খাবার এবং জলের মাধ্যমে ছড়ায় যা প্রাদুর্ভাবের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, বিশেষ করে যে সব এলাকায় অনিরাপদ জল বা খাবার খাওয়া হয়, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধির মান দুর্বল এবং পরিচ্ছন্নতা পরিকাঠামো দুর্বল- সেই সব এলাকা জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।[8]

বাহক অবস্থা
সুস্থ হওয়ার পরেও, ব্যক্তিরা অজান্তেই তাঁদের অন্ত্রে টাইফয়েড ব্যাকটেরিয়া পুষে রাখতে পারেন, যা পরবর্তীকালে ছড়িয়ে পড়তে পারে, নতুন সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি করে এবং কার্যকর রোগ নিয়ন্ত্রণে বাধা সৃষ্টি করে।[8]
টাইফয়েডের প্রতিরোধ নাগালের মধ্যেই!
টাইফয়েড থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এখানে কয়েকটি সহজ পদক্ষেপ দেওয়া হল
টিকাদান

টিকা নিন
WASH পদ্ধতি (জল)

পরিষ্কার পানীয় জল পান করুন
WASH পদ্ধতি (পরিচ্ছন্নতা)

নিরাপদ স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন করুন
WASH পদ্ধতি (হাতের স্বাস্থ্যবিধি)

হাতের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখুন
আপনি নিজেকে এবং আপনার পরিবারকে টাইফয়েড থেকে কীভাবে নিরাপদ রাখবেন তা জানতে চান?
টাইফয়েড সম্পর্কে যে সব তথ্য আপনার জানা উচিত
ভুল তথ্য বিপজ্জনক হতে পারে। তথ্য জানুন, ঝুঁকিগুলি বুঝুন এবং নিজেকে ও আপনার প্রিয়জনদের রক্ষা করার জন্য সঠিক পদক্ষেপ নিন।

টাইফয়েড সম্পর্কে যে সব তথ্য আপনার জানা উচিত
ভুল তথ্য বিপজ্জনক হতে পারে। তথ্য জানুন, ঝুঁকিগুলি বুঝুন এবং নিজেকে ও আপনার প্রিয়জনদের রক্ষা করার জন্য সঠিক পদক্ষেপ নিন।


একটি গভীর দৃষ্টিভঙ্গি:
স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের জন্য টাইফয়েড সংক্রান্ত অন্তর্দৃষ্টি
টাইফয়েড রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ উন্নত করার জন্য সর্বশেষ গবেষণা, মহামারি সংক্রান্ত তথ্য, ক্লিনিকাল নির্দেশিকা এবং প্রমাণ-ভিত্তিক কৌশল সম্পর্কে অবগত থাকুন।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
টাইফয়েড কী?
টাইফয়েড জ্বর সালমোনেলা টাইফি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট হয় এবং এটি দূষিত খাবার এবং জলের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সংক্রামিত রোগীদের মাথাব্যথা, পেটে ব্যথা এবং দুর্বলতার সঙ্গে ধীরে ধীরে জ্বর বৃদ্ধির লক্ষণ দেখা যায়।[6]
টাইফয়েড জ্বরের সাধারণ লক্ষণগুলি কী কী?
টাইফয়েডের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলি হল ক্রমাগত জ্বর যেখানে প্রতিদিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়, এ ছাড়া বাকি লক্ষ্ণণগুলির মধ্যে রয়েছে মাথাব্যথা, চরম ক্লান্তি, পেটে ব্যথা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া।[9]
টাইফয়েড জ্বর কি দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে?
যদি চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে টাইফয়েড জ্বর গুরুতর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে অন্ত্রে ছিদ্র বা রক্তপাত। গুরুতর সমস্যার ক্ষেত্রে, এটি মস্তিষ্ক-সহ অন্যান্য অঙ্গগুলিকেও প্রভাবিত করতে পারে।[10,7]
সংক্রামিত ব্যক্তির সঙ্গে সাধারণ সংস্পর্শে কি টাইফয়েড ছড়াতে পারে?
না, সংক্রামিত ব্যক্তির সঙ্গে সরাসরি বা আকস্মিক সংস্পর্শে টাইফয়েড জ্বর ছড়ায় না। কিন্তু, যদি আপনি তাঁদের স্পর্শ করা কোনও জিনিসের সংস্পর্শে আসেন, বিশেষ করে যদি তাঁরা শৌচাগারে যাওয়ার পর হাত না ধুয়ে থাকেন, তাহলে আপনার টাইফয়েডে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে।[11]
টাইফয়েড থেকে সেরে উঠতে কতক্ষণ সময় লাগে?
একবার টাইফয়েডের চিকিৎসা শুরু করলে, কয়েক দিনের মধ্যে আপনি সুস্থ বোধ করতে শুরু করবেন। জ্বর থেকে সম্পূর্ণ সেরে উঠতে ১০ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে এবং ক্লান্তি এবং দুর্বলতা কমতে আরও বেশি সময় লাগতে পারে। অবশ্য, যদি আপনার জটিলতা বা পুনরায় রোগ দেখা দেয়, তাহলে সেরে উঠতে আরও বেশি সময় লাগতে পারে।[10]
টাইফয়েডের বিভিন্ন ধরণের টিকাগুলি কী কী?
টাইফয়েড জ্বরের জন্য দুই ধরণের টিকা পাওয়া যায়:
- টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (TCV)
- Vi পলিস্যাকারাইড (Vi-PS)[11]
তথ্যসূত্র
- https://www.nejm.org/doi/pdf/10.1056/NEJMoa2209449
- https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/35238365/
- https://immunizationdata.who.int/global/wiise-detail-page/typhoid-reported-cases-and-incidence?CODE=Global&YEAR=
- https://www.nhs.uk/conditions/typhoid-fever/symptoms/
- https://acvip.org/parents/columns/typhoid.php
- https://www.ncbi.nlm.nih.gov/books/NBK557513/
- https://www.mayoclinic.org/diseases-conditions/typhoid-fever/symptoms-causes/syc-20378661
- https://pmc.ncbi.nlm.nih.gov/articles/PMC10236512/
- https://www.nhs.uk/conditions/typhoid-fever/symptoms/
- https://my.clevelandclinic.org/health/diseases/17730-typhoid-fever
- Purple Book: IAP Guidebook on Immunization 2022 By Advisory Committee on Vaccines and Immunization Practices (ACVIP)
দাবিত্যাগ: ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের একটি জনসচেতনতামূলক উদ্যোগ। এই ওয়েবসাইটের বিষয়বস্তু টাইফয়েড সম্পর্কে সাধারণ তথ্য প্রদানের উদ্দেশ্যে তৈরি। এটিকে চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয়। এখানে প্রদর্শিত চিকিৎসক, চিকিৎসা পরিকাঠামো এবং গ্রাফিক্স শুধুমাত্র চিত্রণমূলক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়েছে। আপনার অবস্থা সম্পর্কে যে কোনও চিকিৎসা পরামর্শ বা প্রশ্ন বা উদ্বেগের জন্য আপনার ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।